Hot Posts

6/recent/ticker-posts

লাইলাতুল কদর কোন রাতে?

পবিত্র রমজানুল মুবারক বছরের শ্রেষ্ঠতম সময়। আর রমজানের সর্বাধিক ফজিলতপূর্ণ দিন হলো শেষ ১০ দিন। কারণ, শেষ দশকেই রয়েছে পবিত্র শবে কদর। বিশেষ কারণে শবে কদরের দিনক্ষণ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি; তবে কিছু আলামত ও নিদর্শন বলে দেওয়া হয়েছে।

লাইলাতুল কদর কোন রাতে?শেষ দশ দিন শবে কদর খুঁজতে বলা হয়েছে এবং ব্যাপকভাবে ইবাদতের প্রতি মনোনিবেশ করতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে শবে কদর সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। তুমি কি জানো, লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ (সুরা কদর, আয়াত : ১-৩)


লাইলাতুল কদর কোন রাতে?

শবে কদর কবে? হাদিস শরিফে এসেছে, ‘তোমরা শেষ দশকের বেজোড় রাতে শবে কদর তালাশ করো।’ (বুখারি, হাদিস : ২০১৭)

উবাদা ইবনে সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসুল (সা.) ‘লাইলাতুল ক্দর’ এর ব্যাপারে খবর দিতে বের হলেন। এ সময় দু্ইজন মুসলমান ঝগড়া করছিলেন। তখন নবী কারিম (সা.) বললেন, ‘আমি আপনাদের ‘লাইলাতুল কদর’ এর ব্যাপারে অবহিত করতে বের হয়েছিলাম। কিন্তু অমুক অমুক ব্যক্তি বিবাদে লিপ্ত হওয়ায় তা (সেই জ্ঞান) উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। আশা করি, উঠিয়ে নেওয়াটা আপনাদের জন্য বেশি ভালো হয়েছে। আপনারা সপ্তম (২৭ তম), নবম (২৯ তম) এবং পঞ্চম (২৫ তম) তারিখে এর সন্ধান করুন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৯)
যে রাত শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা

হাদিসবিশারদ ও শরিয়তের গবেষকরা বলেন, রমজান মাসে নির্দিষ্ট কোনো রাতকে লাইলাতুল কদর হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য সুস্পষ্ট দলিলের প্রয়োজন। তবে অন্যান্য রাতের চেয়ে শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর কোনো একটিতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর এর মধ্যে ২৭তম রাতে হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন হাদিস থেকে এ ইঙ্গিত পাওয়া যায়। (ফাতাওয়াউল লাজনাহ আদ্-দায়িমা; সৌদি আরবের ফতওয়াবিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতওয়াসমগ্র : ১০/৪১৩)



প্রখ্যাত হাদিসবিশারদ আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেন, ‘আলেমগণ বলেন, এই রাতটির নির্দিষ্ট তারিখ গোপন রাখার পিছনে হিকমত হলো— মানুষ যেন এ রাতের মর্যাদা লাভের জন্য চেষ্টা সাধনা করে। নির্দিষ্ট তারিখ জানা থাকলে— মানুষ শুধু নির্দিষ্টভাবে সেই রাতে ইবাদত-বন্দেগি করতো। (ফাতহুল বারি : ৪/২৬৬)

বাংলাদেশে ২৭ রমজান দিনগত রাত শবে কদর হিসেবে মানুষের কাছে প্রচলিত। 


শবে কদরে ইবাদত-বন্দেগি হোক বেশি


তাই একজন মুসলিমের নির্দিষ্ট কোনো রাতকে লাইলাতুল কদর হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত নয়। বরং শেষ দশকের সবরাতেই যথাসম্ভব বেশি বেশি ইবাদত করা চাই। বিশেষত শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে রমজানের অন্যান্য রাতের তুলনায় বেশি বেশি ইবাদত, নফল নামাজ, তাসবিহ-তাহলিল ও কোরআন তেলাওয়াত করা চাই।


এটিই নবী (সা.)-এর আদর্শ। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত যে তিনি বলেন, ‘রমজানের শেষ) দশ রাত শুরু হলে— নবী (সা.) কোমর বেঁধে নামতেন। তিনি নিজে রাত জেগে ইবাদত করতেন এবং তার পরিবারের সবাইকে (ইবাদাতের জন্য) জাগিয়ে দিতেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০২৪; সহিহ মুসলিম : ১১৭৪)

Post a Comment

0 Comments