এগুলাে আলােচনা করা হলাে :
প্রাথমিক উপাত্ত সংগ্রহ পদ্ধতি : অনুসন্ধানকারী অনুসন্ধান ক্ষেত্র থেকে যে উপাত্ত সংগ্রহ করেন তাকে প্রাথমিক উপাত্ত বলে। প্রাথমিক উপাত্তের উৎস বিভিন্ন প্রকার। তাই উপাত্ত সংগ্রহের সময় বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এগুলাে নিম্নে আলােচনা করা হলাে :
১. প্রশ্নমালার মাধ্যমে : এ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানকারী উপাত্ত সংগ্রহ করেন প্রশ্নমালা ব্যবহার করে। অনুসন্ধানকারীকে বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গড়ে তােলা হয়। ব্যক্তির নিকট থেকে বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। তাই প্রশ্নমালা প্রণয়নে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। যে বিষয় বা প্রপঞ্চ সম্বন্ধে উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে তার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিকট থেকে প্রশ্নমালার মাধ্যমে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। উপাত্ত সংগ্রহের জন্য ব্যবহৃত প্রশ্নসমূহকে একত্রে প্রশ্নমালা। (Questionnair) বলে ।
সুবিধা:
- . অনুসন্ধান ক্ষেত্র ব্যাপক হলেও উপাত্ত সংগ্রহ করা যায়।
- অর্থ ব্যয় কম হয়।
- অনুসন্ধানকারী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত থাকেন বলে সঠিক উত্তর বের করা সম্ভব হয়।
- যেসব প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা নিয়মিত উপাত্ত সংগ্রহ করেন তাদের জন্য এ পদ্ধতি উপযােগী।
- অল্প সময়ের মধ্যে উত্তর সংগ্রহ করা যায়।
- অনুসন্ধানকারী পক্ষপাতিত্ব করলে উপাত্তের গুণাগুণ নষ্ট হয়।
- অনুসন্ধানকারীর জ্ঞানের স্বল্পতা থাকতে পারে।
- এ পদ্ধতিতে উপাত্ত সংগ্রহে ঝুঁকি বেশি।
সুবিধা :
- সঠিক ও নির্ভুল উপাত্ত সংগ্রহ করা যায় ।
- অনুসন্ধান ক্ষেত্র ছােট হলে সন্তোষজনক উপাত্ত সংগ্রহ সম্ভব।
- সূক্ষ্ম তদন্তের জন্য এ পদ্ধতি অধিক ফলপ্রসূ।।
- সংগৃহীত উপাত্তের উপর আস্থা রাখা যায়।
- অনুসন্ধান ক্ষেত্র ব্যাপক হলে এ পদ্ধতিতে সন্তোষজনক ফল পাওয়া যায় না।
- অনুসন্ধান ক্ষেত্রে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে হয় বলে ঝুঁকিপূর্ণ।
- অর্থ ও সময় সাপেক্ষ।
সুবিধা ;
- ঝুঁকিপূর্ণ উপাত্ত সংগ্রহ করা যায় ।
- ব্যাপক অনুসন্ধানের জন্য ব্যবহার করা যায়।
- অর্থ, সময় ও শ্রম কম ব্যয় হয়।
- ততীয় ব্যক্তি ভল উপাত্ত সরবরাহ করতে পারেন।
- উপাত্তের উপর পূর্ণ আস্থা রাখা যায় না।
সুবিধা :
- অনুসন্ধান ক্ষেত্র বড় হলে বেশিসংখ্যক অনুসন্ধানকারী নিয়ােগ করে দ্রুত উপাত্ত সংগ্রহ করা যায় ।
- নিয়মিত উপাত্ত সংগ্রহের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি উপযােগী।
- অর্থের বিনিময় অনুসন্ধানকারী নিয়ােগ করা হয়। তাই তারা গবেষণার উদ্দেশ্য সম্পর্কে পুরােপুরি সজাগ নাও থাকতে পারেন।
- ব্যক্তিগত ঝুঁকি থাকে।
৬. ডাকযােগে উপাত্ত সংগ্রহ : ডাকযােগে ব্যক্তির কাছে প্রশ্ন পাঠিয়ে উত্তর সংগ্রহ করা হয়। একে প্রশ একটি অংশবিশেষ বলা যেতে পারে।
মাধ্যমিক উপাত্ত সংগ্রহ পদ্ধতি : পূর্বে সংগৃহীত উপাত্ত থেকে নতুন করে যে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয় তাকে মাধ্যমিক উপাত্ত বলে মাধ্যমিক উপাত্ত সংগ্রহে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এগুলাে আলােচনা করা হলাে :
১. সরকারি প্রতিষ্ঠান : প্রত্যেক দেশে সরকারিভাবে বিভিন্ন বিষয়ে পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। এসব পরিসংখ্যান থেকে মাধ্যমিক উপাত্ত সংগ্রহ করা যায়। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন- বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরাে, শিক্ষা দপ্তর, অর্থ ও পরিকল্পনা অধিদপ্তর, শিক্ষা ও বাণিজ্য দপ্তর, প্রতিরক্ষা দপ্তর, শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, পাট বাের্ড, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান প্রতি বছর পরিসাংখ্যিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
২. বেসরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান : বিভিন্ন বেসরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময়ে রিপাের্ট প্রকাশ করে। এগুলাে থেকে মাধ্যমিক উপাত্ত সংগ্রহ করা যায়। যেমন- ব্যাংক, বীমা, বিশ্ববিদ্যালয়, রেলওয়ে ও বিমান সংস্থা প্রভৃতি।
৩. আন্তর্জাতিক সংস্থা : বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও বিভিন্ন সময় অন্তর রিপাের্ট প্রকাশ করে। যেমন- INICEF, UNESCO, IMF, UNFP, BRAC, CARE, WHO, WTO, FAO, USAID gero : 40CT (2167 Stratfaraf. উপাত্ত সংগ্রহ করা যায় ।
৪. গবেষণা প্রতিষ্ঠান : বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এগুলাে থেকে মাধ্যমিক উপাত্ত সংগ্রহ করা যায়। যেমন- BRRI, BARI, BIDS, BARD, T & T প্রভৃতি।
৫. বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান : বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ব্যবসায় বাণিজ্য সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এগুলো থেকে মাধ্যমিক উপাত্ত সংগ্রহ করা যায়। শিল্প, আমদানি, রপ্তানি, পণ্য বিনিময়, মুদ্রা বিনিময় প্রভৃতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রকাশ করে।
৬. সংবাদপত্র ও সাময়িকী : বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সাময়িকী বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। এগুলো থেকে মাধ্যমিক উপাত্ত সংগ্রহ করা যায়। প্রথম আলাে, যুগান্তর, জনকণ্ঠ, অর্থবার্তা, Daily Star, The Economist, Times, News Week. Observer, News Today ।
এছাড়া কর্মকমিশন, নির্বাচন কমিশন, পে কমিশনসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা প্রতিবেদন প্রকাশ করে : এগুলাে থেকে মাধ্যমিক উপাত্ত সংগ্রহ করা যায় ।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলােচনার পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, উপাত্ত সংগ্রহের পর এর নির্ভুলতা আনয়নের জন্য একে সম্পাদন করতে হয় এবং সঠিকভাবে উপস্থাপনও এ প্রসঙ্গে প্রয়ােজন হয়। কেননা, উপাত্ত সংগ্রহের নির্ভুলতা এবং উপস্থাপনার উপর গবেষণার সাফল্য নির্ভর করে।
0 Comments