Hot Posts

6/recent/ticker-posts

নারী নির্যাতন কি? নারী অধস্তনতার সামাজিক কারণ সমূহ আলোচনা কর

নারী নির্যাতন হল-

 Oxford English Dictionary তে বলা হয়েছে, Violence  শব্দটি ল্যাটিন শব্দ, যা  Vialatia থেকে এসেছে,যার শাব্দিক অর্থ শক্তি প্রয়োগ,উৎপীড়ন,আক্রমণ ইত্যাদি। নারীনির্যাতন বলতে শুধু নারীর দৈহিক উৎপীড়ন নয়,বরং যে কোন ধরণের শোষণ করাকে বুঝায়।
জাতিসংঘ ঘোষণা ১৯৯৩ এর  Article -(1), অনুযায়ী নারীনির্যাতন হলো-
Violence against women includes any act of gender base violence that results in or in likely to result in,physical, Sexual or psychological harm or suffering to women including threats such as coercion or arbitrary deprivation of Liberty weather in public or private life.
বাংলাদেশর নারীবাদী জরিনা রহমান খান বলেছেন, নারী নির্যাতন বলতে শুধু নারীকে দৈহিক নির্যাতন নয়, বরং যে কোন ধরণের শোষণ করাকে বুঝায়।

নারী অধস্তনতার সামাজিক কারণঃ-

বাংলাদেশের সমাজের বিভিন্ন দিক থেকে নারীদের অধীস্তনা নিম্নে দেখানো হলো :
১. আইনগত দিক : পিতৃতান্ত্রিক সমাজের মানুষের তাদের নিজেদের সুবিধার জন্য আইন তৈরি করে নিয়েছে। মুসলিম পারিবারিক আইনে বিয়ের সময় মেয়েদের দেনমোহরের একটি অংশ নগদ দেয়ার প্রথা রয়েছে এবং অন্য অংশটি তালাক হলে দিতে হয়ে। কিন্তু এ দেনমোহরানার টাকা অধিকাংশ ক্ষেতৈই দেয়া হয় না। আর বিয়ের সময় যৌতুক তো আছেই। অন্যদিকে, মেয়েরা তার বাবার সম্পত্তির অংশ একজন ছেলের অর্ধেক পায়। স্বামীর সম্পত্তির অংশ এবং ছেলের সম্পত্তি অংশ পায়। তালাক দেয়ার ক্ষেত্রে যেমন ছেলেদের বেশি স্বাধীনতা রয়েছে। তেমন স্বাধীনতা মেয়েদের কম। অন্যদিকে হ্নিদু আইনে মেয়েরা তার বাবার বা স্বামীর সম্পত্তির কোন অংশ পায় না।
২. সামাজিক অবস্থান : সামাজিক ভাবে মেয়েদের অবস্থান একেবারেই নিচে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মেয়েদের অবস্থানকে একেবারেই নিচু চোখে দেখা হয়। যেমন- NGO গুলোর কোন অফিসে কোন মেয়ে চাকরি করলে তাকে এখনো আমাদের সমাজের একটি অংশের বাধার সম্মুখীন হতে হয়।
৩. শিক্ষাক্ষেত্রে : শিক্ষাক্ষেত্রে মেয়েদের অধীনতা বোঝা যায় শিক্ষার হারের দিকে তাকালেই। এদেশে শিক্ষার হার ৫২% ইউনিসেফের রিপোর্ট ৯৯. যার মধ্যে নারী শিক্ষার হার ২৪%। মেয়েদের শিক্ষার তেমন প্রয়োজন নেই, যেটুকু প্রয়োজন বিয়েতে ভালো পাত্রী হবার জন্য এমন একটি ধারণা আমাদের সমাজের মানুষের মধ্যে বিদ্যমান থাকায় নারী শিক্ষার হার কম। আর শিক্ষার দিক থেকে পিছিয়ে থাকার কারণে চাকরির দিক দিয়েও মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অনেকে পিছিয়ে রয়েছে। আর চাকরিরত মেয়েদের অধিকাংশ ক্ষেত্রৈই পারিবারিক ও সামাজিক অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়।
৪. স্বাস্থ্য : ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মেধা কম এ ধারণার প্রেক্ষিতে তাদেরকে ঘরের মধ্যে রাখা হয় এবং ঘরের কাজে লাগিয়ে দেয়া হয়। সারাদিন পরিশ্রম করে তারা খাবার প্রস্তুত করে। ছেলেদের খাওয়ানোর পর সে খাবারের অবশিষ্ট যে অংশ থাকে তাই তারা খায়। এটাই আমাদের সমাজের রীতি। যার কারণে মেয়েরা তাদের প্রয়োজনমতো পুষ্টি পায় না। আর স্বাস্থ্য সচেতনতার ক্ষেত্রে অবহেলা তো আছেই।
৫. অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে : আমাদের দেশের ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা অনেক বেশি কাজ করে। কিন্তু মেয়েদের গৃহস্থালি কাজের কোন অর্থনৈতিক মূল্য নেই। আর চাকরি ক্ষেত্রৈ মেয়েদের সংখ্যা অনেক কম। তাই অর্থনৈতিক দিক দিয়ে মেয়েরা অনেক পিছিয়ে।
৬. মজুরির ক্ষেত্রে : আমাদের দেশের বিভিন্ন রাস্তাঘাট নির্মাণ, ভবন নির্মাণ কাজেও মেয়েরা বিশাল ভূমিকা পালন করে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে দেখা যায় সমান কাজ করলেও নারীদেরকে পুরুষের তুলনায় পারিশ্রমিক অনেক কম দেয়া হয়।
৭. প্রশাসন : আমাদের নারী সমাজের মধ্যে উচ্চ শিক্ষার হার অনেক কম। যারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে তাদের অনেকে আবার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার সুযোগ পায় না।
৮. রাজনীতি : এদেেশর রাজনীতিতে প্রধান স্থান নারী দখল করলেও তা রাজনীতিতে নারীর অধিক উপস্থিতি নির্দেশ করে না। পারিবারিক ও সামাজিক বাধঅ ও নিরাপত্তার অভাবে নারীরা রাজনীতি থেকে অনেক দূরে থাকে।।

Post a Comment

2 Comments

  1. সঠিক বলেছেন। এরকম অবস্থা থেকে সকল নারীকে বের করে আনতে আমি প্রচন্ড লড়াই করে যাচ্ছি। আমি এই প্রচেষ্টায় সকলের সাহায্য কামনা করছি।

    ReplyDelete