Hot Posts

6/recent/ticker-posts

শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়নের গুরুত্ব বা প্রয়ােজনীয়তা

শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়নের গুরুত্ব অপরিসীম। সমাজবিজ্ঞানের একটি নতুন বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত হলেও শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন এর গুরুত্ব পৃথিবীর অনেক দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পাঠ্যবিষয় হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, ভারত ও বাংলাদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েও এর স্বীকৃতির পরিচয় পাওয়া। যায়। ক্রমাগত বিষয়টির গুরুত্ব বাড়ছে এবং এটি একটি একাডেমিক বিষয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়নের গুরুত্ব : শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন একদিকে যেমন শান্তির ধারণা সম্পর্কে তথ্য দেয়। অন্যদিকে তা সংঘর্ষ বিষয়ক নানা তথ্য প্রদান করে থাকে। নিম্নে শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়নের গুরুত্ব আলােচনা করা হলাে :

. ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শান্তি স্থাপন করে : শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে শান্তির সম্পর্ক ব্যক্তিগত শান্তি, প্রতিবেশীর মধ্যে শান্তি, আন্তঃগােষ্ঠীর মধ্যে শান্তি, বৈবাহিক শান্তি, রাষ্ট্র ও সভ্যতার মধ্যে কিভাবে শান্তি অর্জন করা যায় সে সম্পর্কে আলােচনা করে। এ আলােচনা পর্যালােচনা মানবসমাজের প্রভূত উপকার সাধন করে।

২. মূল্যবােধের উপর গুরুত্ব প্রদান করে : শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিশ্লেষণমূলক ও বর্ণনামূলক। এগুলাে মূল্যবােধের উপর। গুরুত্ব দেয়। এর কোনটা ভালাে আর কোনটা মন্দ তা পরিচয় করিয়ে দেয়। এজন্য এ বিদ্যা অধ্যয়ন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৩. তাত্ত্বিক ও প্রায়ােগিক বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেয় : শান্তি ও সংঘর্ষবিদ্যার আর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলাে এর । তাত্ত্বিক ও প্রায়ােগিক দুটি দিক বিদ্যমান। একটা প্যারাডিম গঠন করে কোন সমস্যার তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক দিক আলােচনা করতে পারি। ফলে এতে আলােচনা হয়ে উঠে জিজ্ঞাসাভিত্তিক ও বাস্তবসম্মত।

৪. শান্তির সঙ্গে বহুজাতিক সৃষ্টির সমন্বয়সাধন করে : শান্তি ও সংঘর্ষ বহুজাতিক সৃষ্টির সঙ্গে সমন্বয়সাধন করে শান্তি । সম্পর্কে আলােচনা করে। এটা শান্তির জন্য একটি প্যারাডিম হিসেবে কাজ করে।

৫. যুদ্ধবিদ্যা, সংঘর্ষ, শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে আলােচনা করে : শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন যুদ্ধের কারণ, ফলাফল ও যুদ্ধ। বন্ধের উপায়সমূহ বর্ণনা করে। তাছাড়া এটি সন্ত্রাস, সন্ত্রাসের কারণ, সামাজিক নির্যাতন, বৈষম্য ও দরিদ্র মানুষের অবস্থা বর্ণনা করে। এজন্য শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

৬. নিরস্ত্রীকরণের উপর জোর দেয় : শান্তি ও সংঘর্ষবিদ্যা নিরস্ত্রীকরণ সম্পর্কে আলােচনা করে। নিরস্ত্রীকরলে ত ও যুদ্ধের ভয়াবহতা নির্ভর করে। নিরস্ত্রীকরণ সাধিত হলে এসব ভয় দূর করা যাবে এবং বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত এটা নিমত্রাকরণের জন্য আলােচনা, পর্যালােচনা ও তথ্য অনুসন্ধান করে। এটা যুদ্ধ ও সন্ত্রাসের ক্ষতিকর বিষয়গুলাে ধরে। এজন্য শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

৮. সমাজবিজ্ঞানে স্থান করে নিয়েছে : শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন অতীব জরুরি। কারণ সমাজবিজ্ঞানের মধ্যে এটা নিজের অবস্থান দৃঢ় করেছে। এটা বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানাে হচ্ছে। এজন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এর গুরুত্ব সবাই অনুধাবন করতে পেরেছে। তাছাড়া এর আলােচনা পদ্ধতিও আবিষ্কৃত হয়েছে।

৯. সভ্যতার বিকাশ সাধনে কাজ করে : শান্তি ও সংঘর্ষবিদ্যা সভ্যতার বিকাশ সাধনেও কাজ করে। কারণ এটা সভ্যতা, সভ্যতার ইতিহাস, বিভিন্ন সভ্যতা ও তার বিবর্তন সম্পর্কেও আলােচনা করে। এর মাধ্যমে মানব সভ্যতা ও তার। বিকাশ, তার অবদান সম্পর্কে জানা যায়। এসব কিছু জ্ঞানের পরিধিকে বাড়িয়ে দেয় এবং উন্নত জীবনযাপনের পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞানের পরিকল্পনা বৃদ্ধি করে। তাই শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়নের বিকল্প নেই।

১০. শান্তি বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠা করে : শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন শান্তি ও সংঘর্ষ সম্পর্কে আলােচনা করে একটি শান্তি বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালায়। এটা যেমন শান্তি, শান্তির প্রক্রিয়া, শান্তি অর্জনে পদ্ধতি সম্পর্কে আলােচনা করে, তেমনি সংঘর্ষ, সংঘর্ষের কারণ, সংঘর্ষ নিবারণ সম্পর্কে আলােচনা করে শান্তির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। এজন্য সকলের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন করা অপরিহার্য।

১১. রাজনৈতিক সন্ত্রাস মােকাবিলা করে : রাজনৈতিক ব্যবস্থায় দ্বন্দ্ব-সংঘাত রাজনৈতিক উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ব্যাহত করে। আধুনিককালে ধর্মীয় ভিন্নতা, ভাষাগত ও বর্ণগত পার্থক্য রাষ্ট্রে দ্বন্দ্ব বিরােধের অন্যতম কারণ। এটা। রাষ্ট্রীয় সংহতি নষ্ট করে এবং রাষ্ট্রে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করে। শান্তি ও সংঘর্ষবিদ্যার অধ্যয়ন এসব হতে মানুষকে দূরে। রাখবে। কারণ তারা এর ক্ষতিকারক বিষয় জানতে পারবে।

শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়নের মাধ্যমে বিশ্বকে শান্তির নীড় হিসেবে প্রতিষ্টা করার যাবতীয় কৌশল শেখা যায়। তাই আমাদের উচিৎ শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন করা।

Post a Comment

0 Comments