Hot Posts

6/recent/ticker-posts

কেস স্টাডি পদ্ধতির ধাপসমূহ কি?

 

কেস স্টাডি পদ্ধতির ধাপসমূহ কি?ভূমিকা : ঘটনা অনুধ্যান (Case Study) সামাজিক গবেষণার একটি গুরুতুপূর্ণ কৌশল। পারিবারিক বাজেট সম্পর্কে জানতে গিয়ে সর্বপ্রথম Frederic Leplay ঘটনা অনুধ্যান সামাজিক বিজ্ঞানে প্রয়ােগ করেন। আবার হার্বার্ট স্পেন্সার বিভিন্ন সংস্কৃতির তুলনামূলক পর্যবেক্ষণে ঘটনা অনুধ্যান পদ্ধতি প্রয়ােগ করেন। বস্তুত বর্তমানকালে ঘটনা অনুধ্যান একটি সামাজিক ব্যষ্টিক বিশ্লেষণ হিসেবে পরিচিত। আর ঘটনা অনুধ্যানের মূল লক্ষ্য হলাে নির্দিষ্ট সমস্যার স্বরূপ উন্মােচন করে তার সুষ্ঠু সমাধান পরিকল্পনায় সম্যক সহায়তা করা।

 
ঘটনা অনুধ্যানের ধাপসমূহ (Steps in Case Study) : 
ঘটনা অনুধ্যান পদ্ধতিতে বৈজ্ঞানিক গবেষণার একটি। মৌলিক পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। কিন্তু আধুনিককালে এ পদ্ধতি বিভিন্ন জটিল সমস্যা সমাধানের বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়ােগ করা হয় বলে এর সর্বক্ষেত্রে যথাসম্ভব বিজ্ঞানসম্মত মান বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়। সুশঙ্খল ও ধারাবাহিক কাজ। করা ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি যেসব সাধারণ ধাপ অনুসরণ করা হয় তা হলাে নিম্নরূপ :



১. প্রয়ােজনীয় কেস নির্বাচন
: কেন স্টাডি কাজ শুরু হয় যে কোন সমস্যা বা বিষয়ে নির্বাচন করে নয়, বরং উপযুক্ত সে নির্বাচনের মধ্যদিয়ে যা গবেষকের নির্দিষ্ট সমস্যা দুষ্টান্ত হিসেবে অনুমিত। এসব প্রাসঙ্গিক সকল দিক বিবেচনা করে সংশিষ্ট সমস্যার গভীরতা ও বিস্ততি পরিমাপ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, বাস্তিবাসীদের চিত্তবিনােদন সম্পর্কে জানিতে ইচ্ছুক কোন সমাজ গবেষক বিশেষ কোন একটি বস্তি নির্বাচন করে তার সার্বিক বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করতে পারেন।

২. সাময়িক অনুমান গঠন : কেস স্টাডিতে সঠিক তথ্যসংগ্রহের উদ্দেশ্যে এমন কিছু অনুমান গঠন করে কাজ করা হয়, যার সম্পর্ক সাময়িক এবং কেবল গবেষকের প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখতে সহায়ক। কেননা, এ ধরনের অনুমানের পথ নির্দেশনা ছাড়া এক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট ও অপ্রাসঙ্গিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

৩. উপযুক্ত তথ্যসংগ্রহের উৎস ও মাধ্যম নির্বাচন : কেস স্টাডিতে সাধারণত একাধিক সূত্র হতে বিভিন্ন উপকরণ বা মাধ্যম ব্যবহার করে প্রয়ােজনীয় তথ্যসংগ্রহ করা হয়। তথ্যসংগ্রহের প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষ উৎসের পাশাপাশি যেসব কৌশল তথ্য সংগ্রহকল্পে ব্যবহার ব্রা হয় তার মধ্যে পর্যবেক্ষণ, আলােচনা, চেকলিস্ট, গাইড ইত্যাদি উল্লেখযােগ্য। কেস স্টাডির এ পর্যায়ে তথ্যের যথার্থতা বৃদ্ধির প্রয়ােজনে উৎস ও উপকরণ নির্বাচনে যথেষ্ট সতর্কতা ও দক্ষতার সাথে করা প্রয়ােজন।

৪, তথ্যসংগ্রহ : কেস স্টাডির এ পর্যায়ে বিভিন্ন উৎস হতে একাধিক কৌশল ব্যবহার করে গ্রহণযােগ্য তথ্যসংগ্রহের বেলায় গবেষক বা তার নিয়ােজিত তথ্য সংগ্রহকারীদের কেস স্টাডির উদ্দেশ্য ও পদ্ধতি, তথ্যসংগ্রহের কৌশল ইত্যাদি বিষয়ে পর্যাপ্ত পূর্ব পরিচিতি ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়। তাছাড়া তথ্যসংগ্রহ কালে সর্তক তত্ত্বাবধান ও ক্রস চেকিং এর ব্যবস্থা রাখা হয়।

৫. তথ্য বিশ্লেষণ ; কেস স্টাডির এ পর্যায়ে মাঠ হতে তথ্যাবলি বর্ণনাত্মক উপায়ে বিশ্লেষণ উপযােগী করে গবেষকের উদ্দেশ্য অনুযায়ী উপস্থাপন করা হয়।

৬. সমাধান প্রদান ও ফলাে আপ : কেস স্টাডির এ পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কেসের সমস্যা কিভাবে দূর করা যাবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত থাকবে। তাছাড়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রদত্ত সেবাকর্ম অনুসরণ বা Follow up এর দিকনির্দেশনাও এখানে থাকবে।

উপসংহার : উপযুক্ত আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সমাজ গবেষণার একটি অত্যন্ত গুরুতুপূর্ণ কৌশল হলাে ঘটনা অনুধাবন। এর মূল লক্ষ্য হলাে নির্দিষ্ট সমস্যার স্বরূপ উন্মােচন করে তার সুষ্ঠু সমাধান পরিকল্পনায় সম্যক সহায়তা করা। এ পদ্ধতি সমাজকর্ম, সমাজবিজ্ঞান, মনােবিজ্ঞান, চিকিৎসা বিদ্যা, মনােচিকিৎসা, অর্থনীতি, শিক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সাফল্যের সাথে প্রয়ােগ করা হচ্ছে।

Post a Comment

0 Comments