Hot Posts

6/recent/ticker-posts

আবু সাঈদ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করলেও দুঃখজনকভাবে ফলাফল দেখার সুযোগ পেলেন না

আবু সাঈদ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করলেও দুঃখজনকভাবে ফলাফল দেখার সুযোগ পেলেন না, যা তার ভাইয়ের জন্য গভীর আক্ষেপের কারণ। দীর্ঘদিনের অধ্যবসায় ও পরিশ্রমের পর শিক্ষকতার পথে তার এই সাফল্য অর্জন হলেও জীবনের নিষ্ঠুর পরিহাসে তিনি নিজ চোখে সেই ফলাফল দেখে যেতে পারলেন না। তার ভাই এ ঘটনাকে শুধু ব্যক্তিগত শোক নয়, বরং একজন শিক্ষানুরাগীর অসমাপ্ত স্বপ্ন হিসেবে দেখছেন, যা পুরো পরিবারের জন্য এক বিরাট শূন্যতা তৈরি করেছে।


রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারানোর মাত্র চার দিন আগে তিনি এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।




আজ সোমবার বিকেলে এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে ফলাফল প্রকাশিত হয়, যেখানে দেখা যায়, আবু সাঈদ ইবতেদায়ি শিক্ষক (সাধারণ) হিসেবে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাঁর রোল নম্বর ছিল ২০১২৫৬২৯৭, বাবা মো. মকবুল হোসেন এবং মা মনোয়ারা বেগম।




আবু সাঈদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামে। তাঁর বড় ভাই রমজান আলী প্রথম আলোকে জানান, সাঈদ স্থানীয় জাফরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পান এবং খালাশপীর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। ২০১৮ সালে রংপুর সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করার পর ২০২০ সালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন।



রমজান আলী বলেন, "আবু সাঈদের স্বপ্ন ছিল ম্যাজিস্ট্রেট হওয়া। তবে সংসারের অভাব ঘোচাতে তিনি ইবতেদায়ি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নেন। পাস করল, কিন্তু নিজে দেখে যেতে পারল না। আমাদের এসব দেখে লাভ কি?"




গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। সেই গেটটি এখন শিক্ষার্থীরা "শহীদ আবু সাঈদ গেট" নামে অভিহিত করেছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন।




১২ জুলাই এনটিআরসিএর ব্যবস্থাপনায় ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার স্কুল, স্কুল-২, ও কলেজ পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৮০ জনের মধ্যে ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন আবু সাঈদ, কিন্তু সেই পরীক্ষার মৌখিক পর্বে আর অংশ নিতে পারবেন না তিনি।


Post a Comment

0 Comments