ভারতের সর্বশেষ নির্বাচনে বিজেপির বিজয়ের কারণ:-
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সুহাস পালশিকার বলছেন, কংগ্রেসের পর ভারতে বিজেপি দ্বিতীয় কোনো দল যারা “প্রভাবশালী একটি রাজনৈতিক দল ব্যবস্থা“ গড়ে তুলতে সমর্থ হয়েছে।
প্রথম ছিল ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস যারা ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারত শাসন করেছে। কিন্তু ১৯৮৪ সালে রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের পর বিজেপিই একমাত্র এবং প্রথম দল যারা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে।
মি. পালশিকার বলছেন, ইন্দিরা গান্ধীর পর নরেন্দ্র মোদী “একমাত্র রাজনৈতিক নেতা যিনি সত্যিকার অর্থে প্রায় পুরোটা ভারত জুড়ে সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পেরেছেন।“
১.মোদীর ‘সম্মোহন‘
বিজেপির নির্বাচনী সাফল্যের মূলেই রয়েছে মি. মোদীর সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব এবং সেই সাথে ধর্মীয় মেরুকরণ ও কট্টর জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রসার।
বিজেপির এই রাজনীতির প্রচার এবং প্রসারের পেছনে রয়েছে অক্লান্ত নিবেদিতপ্রাণ কর্মীর বিশাল এক নেটওয়ার্ক। এসব কর্মীর অনেকেই বিজেপির আদর্শিক পথ-প্রদর্শক কট্টর হিন্দু সংগঠন আরএসএস-এর (রাষ্ট্রীয় স্বয়ং-সেবক সংঘ) বা তাদের “জঙ্গি সহোদর“ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) তৃণমূল স্তরের নেতা-কর্মী।
২. হিন্দু ঐক্য
বিজেপির প্রধান লক্ষ্য ভারতের হিন্দুদের - যারা দেশের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ - ঐক্যবদ্ধ করা এবং তাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের পক্ষে ভোট দেওয়ানো।
সে কারণে, বিজেপি হিন্দু ধর্মের ভেতর জাতপ্রথার বাস্তবতাকে চাপা দিয়ে রাখতে তৎপর, এবং সেই সাথে “ইসলাম বিদ্বেষকে“ উস্কানি দেওয়া, এবং একই সাথে, অধ্যাপক সিতাপতির মতে, প্রাচীন হিন্দু শাস্ত্রের গুরুত্ব প্রচার করা বিজেপির প্রধান কাজ।
৩.‘অস্বাভাবিক রাজনৈতিক দল‘
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মিলন বৈষ্ণব তাই মনে করেন বিজেপি একটি “অস্বাভাবিক রাজনৈতিক দল।“
“এটি আসলে আদর্শভিত্তিক অনেকগুলো হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠনের রাজনৈতিক শাখা। এই নেটওয়ার্ক ভিত্তিক মডেলের কারণে বিজেপি তাদের সাথে সম্পর্কিত তৃণমূল হিন্দু সংগঠনগুলোর কাছ থেকে প্রচুর সমর্থন ও শক্তি পায়। বিস্তৃত এই নেটওয়ার্কের কারণে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা শেষ পর্যন্ত তাঁবুর নীচেই থেকেই যায়, “ বলছেন অধ্যাপক বৈষ্ণব যিনি ওয়াশিংটনে গবেষণা সংস্থা কার্নেগী এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের একজন সিনিয়র ফেলো।
তবে তার অর্থ এই নয় যে বিজেপির ভেতর কোনো ভিন্নমত অবশিষ্ট নেই।
0 Comments