দার্শনিক প্লেটোর শিষ্য ও প্রাণি বিজ্ঞানের জনক এরিস্টটল খ্রিষ্টপূর্ব ৩৮৪ সালে স্টাগিরাস নামের এক গ্রিক উপনিবেশে জন্ম নেন।
শৈশবে তার বাবা মারা যান। ১৮ বছর বয়সে তিনি গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে চলে আসেন এবং বিজ্ঞানী প্লেটোর একাডেমিতে ভর্তি হন। প্লেটোর অধীনে তিনি সেখানে ২০ বছর শিক্ষা গ্রহণ করেন।
প্লেটোর মৃত্যুর পর প্লেটোর এক আত্মীয় স্পেয়াসিপসকে তার একাডেমির দায়িত্ব দেওয়া হয়। স্পেয়াসিপসের সাথে মনোমাল্যিনের কারণে এরিস্টটল এথেন্স ছাড়তে বাধ্য হন।
তারপর তিনি মেসিডোনিয়ার রাজা দ্বিতীয় ফিলিপের ছেলে আলেকজান্ডারের (দ্য গ্রেট) শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। ফিলিপের মৃত্যুর পর আলেকজান্ডার যখন রাজ্যের শাসনভার গ্রহণ করেন, এরিস্টটল এথেন্সে ফিরে আসেন। ততদিনে দর্শন শাস্ত্রের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে।
এথেন্সে ফিরে তিনি লাইসিয়াম নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তী ১৩ বছর তিনি শিক্ষকতা ও দর্শন প্রচার করে কাটান। রাতে এথেন্সের জ্ঞানপিপাসু লোকজনদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতাও দিতেন তিনি।
রসায়নশাস্ত্র, অধিবিদ্যা, রাজনীতি, পদার্থবিদ্যাসহ সবক্ষেত্রে পারদর্শী ছিলেন তিনি। 'নিকোম্যাসিয়ান নীতিশাস্ত্র'কে তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
তিনি যেমন জ্যোতির্বিজ্ঞান, ভ্রূণতত্ত্ব, ভূ-তত্ত্ব প্রভৃতি নিয়ে লিখেছেন তেমনি নীতিশাস্ত্র, নন্দনতত্ত্ব, সরকার, রাজনীতি, অধিবিদ্যা, অর্থনীতি, অলঙ্কারশাস্ত্র, মনোবিজ্ঞান ও ধর্মতত্ত্ব নিয়েও লিখেছেন।
এছাড়া সাহিত্য, কবিতা ও বিভিন্ন দেশের অনেক উল্লেখযোগ্য বিষয় নিয়েও তার লেখা রয়েছে।
খ্রিষ্টপূর্ব ৩২৩ সালের দিকে আলেকজান্ডারের অকাল মৃত্যুতে এথেন্সের মেসিডোনিয়ার আগের সরকারকে উৎখাত করা হয়। তখন অ্যারিস্টটলের উপর ধর্মীয় বিশ্বাসহীনতার অভিযোগ আনা হয়। শাস্তি থেকে রক্ষা পাবার জন্য দ্রুত ইউবোয়ার ক্যালসিসে চলে যান তিনি। তিনি ভয় করছিলেন, তার অবস্থাও যেন প্লেটোর শিক্ষক সক্রেটিসের মত না হয়। ক্যালসিসে প্রথম বছরই তিনি পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হন এবং খ্রিষ্টপূর্ব ৩২২ সালে মারা যান।
0 Comments