Hot Posts

6/recent/ticker-posts

গবেষণার বিষয়বস্তু নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদান ও গবেষণা সমস্যা নির্ধারণে গবেষককে কোন কোন বিষয়ের দিকে গুরুত্ব দিতে হয়



গবেষণার বিষয়বস্তু নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানসমূহ
(Factors Affecting the Selection of a Research Topic)

গবেষণার বিষয়বস্তু নির্বাচনে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন বাধা ধরা নিয়ম নেই। তবে কোন বিষয়বস্তু নির্বাচনের ক্ষেত্রে গবেষক নিজের কাছে কিছু প্রশ্ন রাখতে পারেন। যেমন,

  1. নির্বাচিত সমস্যাটি কি গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
  2. এই গবেষণা কি কোন পার্থক্য তৈরি করবে?
  3. কেন করবে?
  4. কীভাবে করবে?
  5. গবেষণাটি কী কৌতূহলােদ্দীপক হবে?
  6. এটি কি এমন কোন ধারণার সাথে সংশ্লিষ্ট হবে, যার ব্যাপক ও বিস্তৃত প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে
  7.  প্রচলিত ধ্যান ধারণার মধ্যেকার অসঙ্গতিগুলাে কী এই গবেষণার মাধ্যমে প্রকাশিত হবে? 
  8.  এই গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফল প্রচলিত সামাজিক রীতি ও অনুশীলন পরিবর্তনে সহায়ক হবে।
  9. এই গবেষণা কী গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রসঙ্গের ক্ষেত্রে কোন নতুন অন্তদৃষ্টি বা উপলব্ধির জন্ম দেবে? ইত্যাদি।

উপরিল্লিখিত প্রশ্নগুলাে পর্যালােচনার পর একজন গবেষক তার নিজের আগ্রহ, বা সবচেয়ে ব্যাখ্যাযােগ্য অনুকল্প কি হবে, তার বিবেচনা, বা সমস্যাটি নিয়ে গবেষণা করলে বিষয়বস্তুর উপর বিদ্যমান জ্ঞানকে অর্থবহভাবে সঙ্গতিপূর্ণ করবে কি না, বা সে বিষয়টি জ্ঞানের জগতে কোন অভিনব অবদান রাখবে কি না, এসবের ভিত্তিতে গবেষণার বিষয়বস্তুকে নির্বাচন করবেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে, বিষয়বস্তুর নির্বাচনটি হয়ে থাকে সম্ভবত অনুসন্ধানকারীর বাস্তবায়নের ক্ষমতার উপর। যা হােক, গবেষণার বিষয়বস্তু নির্বাচনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু উপাদান রয়েছে, যা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। গুরুত্বপূর্ণ এমন কিছু উপাদানের উল্লেখ কল্লা যেতে পারে। সেগুলাে হলাে:

সমাজবৈজ্ঞানিক আদর্শ রূপ (Sociological Paradigm): সমাজবৈজ্ঞানিক চিন্তার ক্ষেত্রে অনেক রকম আদর্শ বা মতবাদ রয়েছে, যেগুলাের প্রতিটির মূল্যবােধ, পদ্ধতি, পরিধি, প্রকৃতি এবং আপেক্ষিক প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ভিন্নতা রয়েছে। এ সব আদর্শ বা মতবাদ গবেষণা সমস্যা নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে।


গবেষকের নিজস্ব মূল্যবােধ, পছন্দ ও রুচিবোেধ (Researcher's Personal Values, Tastes
d Preferences):
গবেষণার বিষয় নির্বাচনে গবেষকের নিজস্ব পছন্দ ও রুচিবােধ বিরাট ভূমিকা রাখে। যেমন, অনেক গবেষক রয়েছেন যারা গবেষণার সূক্ষ্মতা ও বিশুদ্ধতাকে বেশী গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তারা মনে করেন যে, প্রাকৃতিক পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ে পরিচালিত গবেষণার মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত কম সূক্ষ্ম উপাত্ত সংগ্রহের চেয়ে পরীক্ষাগারে নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতিতে পরিচালিত গবেষণার মাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ উপাত্ত সংগ্রহ অধিকতর বিজ্ঞানসম্মত। গবেষকের মূল্যবােধ শুধু যে বিষয়বস্তু নির্বাচনকেই প্রভাবিত করে তাই নয়, কি পদ্ধতিতে গবেষণাটি পরিচালিত হবে এবং গবেষক নিজের সাথে গবেষণার বিষয়বস্তুর সম্পর্কটিকে কিভাবে দেখবেন তাও নির্ধারিত হয়।

প্রতিক্রিয়ার মাত্রা (Degree of Reactivity): উপাত্ত সংগ্রহের পদ্ধতির মধ্যে সহজাত প্রতিক্রিয়ার মাত্র গবেষণার বিষয়বস্তু নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রতিক্রিয়ার মাত্রা বলতে একটি গবেষণায় ব্যবহৃত উপাত্ত সংগ্রহের পদ্ধতি উপাত্তকে কিভাবে এক কতটুকু প্রভাবিত করে সেই বিষয়টিকে বােঝায়। যাদের উপর গবেষণা পরিচালনা করা হয়, তারা পর্যবেক্ষণকারীর উপস্থিতিতে এক ধরণের আচরণ করেন এবং অনুপস্থিতিতে আরেক ধরণের আচরণ করেন। অতএব, একটি বিশেষ গােষ্ঠী কিভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবে, সেটি বিবেচনা করে গবেষক সিদ্ধান্ত নেবেন যে, তার গবেষণার প্রসঙ্গটি কি হবে এবং গবেষণায় ব্যবহৃত পদ্ধতিটি কি হবে।

গবেষণা পদ্ধতি (Research Methodology): গবেষণায় অনুমিত অনুকল্প পরীক্ষার জন্য কি ধরণের পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত হবে, বা আদৌ কোন অনুকল্প পরীক্ষিত হবে কি না, বা কার্য-কারণ সম্পর্ক ব্যাখ্যা করা হবে কি না, ইত্যাদি বিষয়ের সাথে গবেষণার পদ্ধতি এবং বিষয়বস্তু নির্বাচনের একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কারণ, কোন গবেষক হয়তাে সহ-সম্পর্নে সহগ নির্ণয় করে একটি সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যানগত
তাৎপর্য মাত্রায় সেই সম্পর্কটিকে প্রমাণ করতে চান, আবার অন্যজন সাদামাটা পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে | শুধুমাত্র আচরণের বর্ণনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাইবেন। গবেষণার বিষয়বস্তু কি হবে, তা নির্ভর করবে এই সব সিদ্ধান্তের উপর।

বিশ্লেষণের একক (Unit of Analysis): বিশ্লেষণের একক যদি ছােট হয় (যেমন, একজন ব্যক্তি), সে ক্ষেত্রে গবেষণার বিষয়বস্তু এক রকম হতে পারে, আবার যদি বিশ্লেষণের একক বড় হয় (যেমন, একটি প্রতিষ্ঠান বা সম্প্রদায়), তবে তার বিষয়বস্তু নির্বাচন ন্নি হতে পারে।

সময়কাল (Time): গবেষণা যদি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হয় (cross sectional), তবে বিষয়বস্তুর | নির্বাচন এক রকম হবে, এবং যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য হয় (longitudinal), তবে বিষয়বস্তুর নির্বাচন ভিন্ন রকম হতে পারে।

গবেষণার প্রকৃতি (Nature of the Research): গবেষণাটি কি তত্ত্বীয় ধরণের, না কি প্রায়ােগিক ধরণের হবে তার উপর নির্ভর করবে গবেষণার বিষয়বস্তু কি হবে।

সম্মান ও অর্থ (Prestige and Money): গবেষক কি বিষয়ে গবেষণা করবেন তা নির্ধারণের জন্য। সম্মান ও অর্থ অনেক ক্ষমতাশালী উদ্দীপক হিসাবে কাজ করে।






গবেষণার জন্য বিষয়বস্তু নির্বাচনে বাস্তবায়নযােগ্যতার গুরুত্ব (Importance of Feasibility in Selecting a Topic for Research) 
গবেষণার জন্য একটি বিষয়বস্তু নির্বাচনের ক্ষেত্রে গবেষণাটি বাস্তবায়ন করা যাবে কি না, সেই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, উপরিল্লিখিত সব উপাদানের বিচারে হয়তাে একটি প্রসঙ্গকে গবেষণার বিষয়বস্তু

সাবে নির্বাচন করা হলাে। কিন্তু দেখা গেল যে, বিষয়টি গবেষণার জন্য বাস্তবায়নযােগ্য নয়। বিষয়বস্তুর প্রকৃতির স্থিতার কারণে বিভিন্ন বিষয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা গবেষণা বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তবে, গবেষণার জন্য বিষয়বস্তু নির্বাচনে কতগুলাে সাধারণ বিষয় রয়েছে, সেগুলাের আলােচনা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, সমস্যার পরিধি, সময়, অর্থ, অন্যদের কাছ থেকে সহযােগিতা, যথাযথ নমুনা, ঝাপাতি ও সরঞ্জাম, ঝামেলা এড়ানাে, বিষয়বস্তুর সংশােধন বা পরিবর্তন করা, ইত্যাদি। বিষয়গুলাে নিমে কিছুটা বিস্তারিতভাবে আলােচনা করা হলাে।

সমস্যার পরিধি (Scope of the Problem): অধিকাংশ শিক্ষানবিশ গবেষক অনেক বেশী চলক নিয়ে অনেক বড় বিষয়বস্তুকে গবেষণার জন্য নির্বাচন করেন। অনেক বেশী চলকসম্পন্ন বিষয়বস্তুর নির্বাচন গবেষণাকে অবাস্তবায়নযােগ্য করে তােলে। আমরা পাঠ ২-এ দেখবাে যে, একটি বিষয়বস্তুকে ব্যাখ্যার জন্য বহু রকম গবেষণা প্রশ্ন উত্থাপিত হতে পারে, কিন্তু গবেষক এর একটি বা দুটি প্রশ্ন নিয়েই কেবল তার গবেষণা কর্ম পরিচালনা করতে পারেন। আমরা ইতােমধ্যেই জেনেছি যে, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানের কোন প্রপঞ্চকে ব্যাখ্যা করতে হলে, যত কম চলকের মাধ্যমে ব্যাখ্যাটি করা যায়, সেই ব্যাখ্যাটি ততবেশী সূক্ষ্মতা অর্জন কৰে। অতএব, যেহেতু একটি বিষয়ের সব প্রসঙ্গকে একটি গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা যায় না, সেহেতু গবেষণায় কি কি লক অন্তর্ভুক্ত করা হবে তার সীমারেখা টানতে হবে। একটি গবেষণায় কতগুলাে প্রসঙ্গ নির্বাচন করা যায়, সে বিষয়ে কোন নিয়ম বেঁধে দেয়া না গেলেও এটুকু বলা যায় যে, যদি বিষয়বস্তুটি জটিল হয়, তবে একটি বা দুটির বেশী প্রসঙ্গ একটি গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা বাস্তবসম্মত হবে না। গবেষককে এমন কিছু প্রসঙ্গকে বেছে নিতে হবে, যেগুলাে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং যেগুলাে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে।

সময় (Time): একটি গবেষণা বাস্তবায়ন করার জন্য সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অধিকাংশ ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে, গবেষণা সম্পন্ন ব্রার জন্য যে সময় নির্ধারণ করা হয়, গবেষণা শেষ করতে তার চেয়ে অনেক বেশী সময় লেগে যায়। গবেষণার জন্য এমন কোন বিষয়বস্তু নির্বাচন করা ঠিক হবে না, যা নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যাবে না। অতএব, বিষয়বস্তু নির্বাচনের পূর্বে গবেষককে খুব ভালােভাবে ভাবতে হবে যে, গবেষণা কর্মটি সময়মত শেষ প্রা যাবে কি না। তা করতে গিয়ে যথাযথ নমুনা নির্বাচনে উপাত্ত সংগ্রহের হাতিয়ার নির্মাণ, উপাত্ত সংগ্রহ, উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ, বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা এবং গবেষণা প্রতিবেদন লিখতে কত সময় লাগবে, এ সকল বিষয়ে গবেষককে বিবেচনা করতে হবে।

অর্থ (Money); সময়ের মত অর্থও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নির্ধারিত সময়ে গবেষণা সম্পন্ন করতে না পারলে ব্যয় বেড়ে যাবে এবং ব্যয় বৃদ্ধি পেলে গবেষণা বাস্তবায়ন করা যাবে না। উপরন্তু, এমন কোন বিষয়বস্তু নির্বাচন করা ঠিক হবে না, যাতে করে গবেষণা সম্পন্ন করতে গিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থের ঘাটতি দেখা দেয়, বা দাতা গােষ্ঠী বা পৃষ্ঠপােষক প্রয়ােজনীয় পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। পাশাপাশি, গবেষণা প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত প্রতিটি সম্ভাব্য উপাদান হিসাবের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কি , তা লক্ষ্য রাখতে হবে। গবেষণা বাস্তবায়নের কোন পর্যায়ে যদি অপ্রত্যাশিতভাবে কিছু অর্থ ব্যয় হবার সম্ভাবনা থাকে, সেই সম্ভাবনাকেও পরিকল্পনার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যেমন, নির্বাচিত নমুনাগুলাে যদি বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে থাকে, তবে স্বাভাবিকভাবেই একটি নমুনা থেকে আরেকটি নমুনায় যেতে যাতায়াত খরচ বেশী প্রয়ােজন হবে। যদি কোন নমুনা সংগ্রহে নমুনা তালিকা তৈরি করতে হয়, সেটিও হিসাবের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

অন্যান্যদের কাছ থেকে সহযােগিতা (Cooperation from Others): এ পর্যন্ত আলােচনায় মনে হতে পারে যে, একটি সহজ সরল গবেষণার বিষয় নির্বাচন, যথেষ্ট সময় এবং অর্থ প্রাপ্তি ঘটলেই লােধ হয় একটি গবেষণার বাস্তবায়ন সহজ হয়ে যায়। কিন্তু বিষয়টিকে এত সালভাবে দেখলে হবে না। কারণ, অনেক সময় দেখা যায় যে, গবেষণার সাথে অন্যান্য যে সব ব্যক্তি সম্পৃক্ত থাকেন তাদের কাছ থেকে সহযােগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। যেমন, গবেষণার বিষয়বস্তুর মধ্যে এমন কিছু প্রসঙ্গ থাকতে পারে, যেগুলাে সম্পর্কে উত্তরদাতাৱা তথ্য সরবরাহ করতে রাজী নাও হতে পারেন। পরীক্ষণমূলক গবেষণায় যাদের উপর গবেষণা পরিচালনা করা হবে, তাদের সম্মতির প্রয়ােজন। স্থি গবেষণা কর্ম শুরু করতে দিয়ে দেখা গেল যে, তাদের সম্মতি পাওয়া যাচ্ছে না। সাক্ষাৎকারের জন্য অনেক বেশী সময় প্রয়ােজন হলে, উত্তরদাতারা সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীকে সহযোগিতা না কতে পারেন। কাজেই, গবেষণার বিষয় নির্বাচনের সময় এ বিষয়গুলাে বিশেষভাবে লক্ষ রাখতে হবে, নইলে গবেষণা বাস্তবায়ন অসম্ভব হয়ে পড়বে।

যথাযথ নমুনা পাওয়া (Availability of Reseach subjects)! শুধু উত্তরদাতাদের সহযােগিতাই যথেষ্ট নয়। একটি বিষয়বস্তু নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে যদি বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন প্রয়ােজনীয় সংখ্যক নমুনা না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে গবেষণা বাস্তবায়ন ব্রা সম্ভব হবে না। নমুনায় প্রয়ােজনীয় অনেক ব্যক্তি রয়েছেন, যারা অধিকাংশ সময় বাড়ির বাইরে অবস্থান করেন, বা বাড়িতে থাকলেও গবেষণায় অংশগ্রহণ করতে চান না। এমন কি, সংখ্যালঘু অনেক সম্প্রদায়ের সদস্য রয়েছেন, যারা গবেষণার বিষয়বস্তু হতে চান না। এ ধরণের বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন নমুনার সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তু নিয়ে গবেষণা পরিকল্পনা করলে অনেক সময় গবেষণা কর্ম সম্পন্ন করা কঠিন হয়ে পড়ে।



ঝামেলা এড়ানাে (Avoiclance of Trouble): অনেক অনভিজ্ঞ গবেষক নিজের আগ্রহ এবং ঔৎসুক্যের ফলে এমন একটি বিষয়বস্তু নির্বাচন করেন, যা গবেষণার মাঝ পথে বা শেষ প্রান্তে গিয়ে রাজনৈতিক বা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে, গবেষক তার কর্মকান্ড স্থগিত করে পরিকল্পিত গবেষণাকে বর্জন করতে বাধ্য হতে পারেন। সে জন্য গবেষণা পরিকল্পনার সময় নির্বাচিত বিষয়বস্তুর সব প্রসঙ্গগুলােকে পর্যালােচনা করে সম্ভাব্য সকল সমস্যাকে চিহ্নিত করতে হবে এবং সেগুলাে কিভাবে মােকাবেলা করা যাবে, তার কৌশল ও বিকল্প কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।

সংশােধন বা বর্জনের সিদ্ধান্ত (Decision to Abandon or Revision): গবেষণা প্রক্রিয়ার এক পর্যায়ে যদি দেখা যায় যে, গবেষণাটি যেভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিলাে, ঠিক সেভাবে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে গবেষক কি করবেন? অনেকে মনে করতে পারেন যে, গবেষণা কর্মটি বর্জন করা | উচিৎ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সেটি করাই হয়তাে সমীচীন হবে।

তবে, তার পূর্বে সম্ভাব্য সকল সম্ভাবনাকে মূল্যায়ন করে দেখতে হবে যে, কোনভাবে পরিকল্পনাকে সংশােধন করে গবেষণা কর্মটিকে সম্পন্ন করা যায় কি না। যেমন, কিশাের-কিশােরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য | বিষয়ে গবেষণার জন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের নমুনায় অন্তর্ভুক্ত করা।
প্রয়ােজন। কিন্তু কিছু বেসরকারী স্কুলে এমন নীতিমালা থাকতে পারে যে, ছাত্র-ছাত্রীদের উপর স্কুলের বাইরের কারাে গবেষণা করার অনুমতি নেই। সে ক্ষেত্রে, গবেষণা কর্মটিকে বর্জন করার পূর্বে যেখানে এমন প্রতিবন্ধকতা নেই, এমন সরকারী বা অন্য বেসরকারী স্কুল দ্বারা সেই স্কুলগুলােকে প্রতিস্থাপিত করা যায় কি না, এই সম্ভাবনাটিকে খতিয়ে দেখতে হবে।

Post a Comment

0 Comments